শাকিল খান (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ ছয় ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ । বাংলাদেশে শীতের মাস হচ্ছে অন্যতম এক বিশেষ মাস। শীত মৌসুমে এদেশের মানুষের চলে মহা উৎসবময় সময়। শীত সময়ে শীতের পিঠা খাওয়ার হিরিক লেগে যায় এদেশের মানুষের। শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে কদর বেড়ে যায় খেজুর গাছের। গাছ থেকে রস সংগ্রহ, গুড় তৈরি; আর রস ও গুড়ের নানা শীতকালীন পিঠা তৈরির ধুম পড়ে গ্রাম বাংলায়। সারাবছর অবহেলিত খেজুর গাছগুলোকে ঝুড়ে নতুন রূপ দেন গাছিরা।
মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলা বিভিন্ন উপজেলার গ্রামে গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছগুলোকে প্রস্তুত করতে গাছিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এর মধ্যে অন্যতম খেজুরের রসের গুরের মধ্য হচ্ছে হাজারী গুর। এই হাজারী গুর সরা বিশ্বে এর কদর রয়েছে। বাংলাদেশে এক নামে পরিচিত লাভ করেছে এই হাজারী গুর।
এ ব্যাপারে গাছিরা বলেন খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়া রস,গুড় ও পাটালির দাম থাকে একটু চড়া। তবু এই রস নিতে ভুল করেন না সকল শ্রেণীর মানুষ। কাঁচা রস প্রতি ভাড় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা হয়ে থাকে। আর হাজারী গুর ১০০০ থেকে ১২০০টাকা, পাটালী প্রতি কেজি ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার পালা।
এছাড়া খেজুর পাতা দিয়ে তৈরী করা হয় আর্কষণীয় ও মজবুত শীতল পাটি। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনসহ বন বিভাগের নজরদারী না থাকায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পরিবেশবান্ধব খেজুর গাছ এখন প্রয়ই বিলুপ্তির পথে।
খেজুরের গুড় উপজেলার ঝিটকার একটি ঐতিহ্য। রস থেকে গুড় তৈরি একটি শিল্প। এই শিল্পের সঙ্গে উপজেলার শতাধিক পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। শীত এলেই খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি করতে দেখা যায় । তবে খেজুর গুড়ের নামে ভেজাল গুড় তৈরি হওয়ায় ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পটি হারাতে বসেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর গফফার জানান, সারাদেশে পরিকল্পিতভাবে খেজুর গাছ রোপণ করা দরকার। তাহলে শীত মৌসুমে উপাদেয় রস দেশীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমাদের বিরাট ভূমিকা রাখতে পারবে। খেজুরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে দেশি চারার পাশাপাশি বিদেশি চারাও রোপণ করা প্রয়োজন।