তাজুল ইসলাম রাকিব, লৌহজং প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে কবরস্থানের জায়গা নিয়ে বিরোধে বৃদ্ধের হাত ভেঙে দিয়েছে প্রতিপক্ষ। উপজেলার গাওদিয়া ইউনিয়নের হাড়িদিয়া গ্রামে বৃৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত বৃদ্ধের নাম মো. শরীফুল ইসলাম (৬২)। তিনি এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। জানা গেছে, উপজেলার গাওদিয়া ইউনিয়নের প্রায় দুইশ বছরের পুরনো হাড়িদিয়া কবরস্থানের দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। জহির দেওয়ান ও আবুল কালাম আজাদ খোকন মুন্সীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
আবুল কালাম আজাদ খোকন মুন্সীর অভিযোগ, দীর্ঘ ১ যুগ ধরে প্রায় ৫০টি বস্তি ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিচ্ছেন স্থানীয় জহির দেওয়ান। সে এই জায়গায় এখন মাদক ব্যবসাসহ অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, কবরস্থানের পাশে আমি আমার জায়গায় অসহায় মানুষকে বিনা ভাড়ায় থাকতে দিয়েছি। অন্যদিকে, জহির দেওয়ানের বক্তব্য হচ্ছে- দুশ বছরের পুরনো ওয়াকফকৃত কবরস্থানটি খোকন মুন্সী দখল করে বাসা ভাড়া দিয়েছেন। অথচ আমার কথা বলে বেড়াচ্ছে যে, আমি নাকি কবরস্থান দখল করে বস্তিঘর নির্মাণ করে অসামাজিক কার্যকল্পাপ চালাচ্ছি। এ জমিটি আমার ক্রয়কৃত। আহত শরীফুল ইসলাম হচ্ছেন সম্পর্কে জহির দেওয়ানের ফুপাতো ভাই। শরীফুলের মা বাপেরবড়ি থেকে দুই শতাংশ জায়গা পান। সেই জায়গা শরীফুল কবরস্থানকে দান করে দেন। এ বিষয়টি ভালো লাগেনি জহির দেওয়ানের। তাছাড়া প্রতিপক্ষ খোকন মুন্সীর সঙ্গে শরীফুলের সখ্য রয়েছে।
উল্লেখিত বিষয় দুটির কারণে খোকন মুন্সীর উপর নাখোশ হন জহির দেওয়ান। এরই জেরে বৃহস্পতিবার ভোরে শরীফুল ইসলাম প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে এলে জহির দেওয়ান তার ছেলে শান্ত ও স্থানীয় যুবক জাহিদ দেওয়ানের সহযোগিতায় শরীফুলকে মুখে গামছা পেচিয়ে, হাত-পা বেঁধে পাশের বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে লাঠিসোঁটা দিয়ে শরীরের নানাস্থানে আঘাত করে। এতে শরীফুলের বাম হাত ভেঙে যায় এবং তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তারা চলে যায়। পরে সকালে শরীফুলের পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লৌহজং থানায় জহির দেওয়ান ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল।
এদিকে জানাযায় ২৬ শতাংশের পুরনো কবরস্থানটি দখলমুক্তের দাবী এলাকাবাসীর। এলাকাবাসী বলছে এ কবরস্থানটি আমাদের এলাকার প্রায় দুইশত বছরের পুরনো কবরস্থান। এটি এখন দখলে রয়েছে। আমরা সকলে চাই এটি অবমুক্ত হোক।
এ বিষয়ে লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর হোসাইন জানান, পুলিশ পাঠিয়েছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থ গ্রহণ করা হবে।#