তাজুল ইসলাম রাকিব: লৌহজংয়ে মজুদ করা সাড়ে ৭ মেট্রিক টন মা ইলিশ উদ্ধার করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য অর্ধকোটি টাকা। গােপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে লৌহজংয়ের কলমা ইউনিয়নের ডহরি গ্রামের সেন্টু সর্দারের বাড়ি থেকে মা ইলিশের এই বিশাল চালনটি জব্দ করা হয়। লৌহজং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মু. রাশেদুজ্জামান অভিযান শেষে জানান, গােপন সংবাদের ভিত্তিতে সােমবার বিকেলে লৌহজংয়ের কলমা ইউনিয়নের ডহরি গ্রামের সেন্টু সর্দারের বাড়িতে রাত ৯টা পর্যন্ত অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় সেন্টু সর্দারের একটি ঘর তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। ঘরের তালা ভেঙে ভিতরে দেখা যায় সারি সারি ককশিটের বাক্স। প্রতিটি বাক্সের মুখ স্কচটেপ দিয়ে বন্ধ ছিল। বড় এক কটশিট
খুলে দেখা যায় বরফের নিচে থরে থরে মা ইলিশ মজুদ করা হয়েছে। এ রকম মােট ৫৯টি বড় আকারের ককশিটের বাক্সে এসব ইলিশ রাখা ছিল। প্রতিটি বাক্সে প্রায় ১শ’র উপরে মাছ রয়েছে। যার ওজন প্রায় সাড়ে ৭ টনের মত। টাকার অংকে মজুদ ইলিশের মূল্য প্রায় অর্ধকোটি টাকা। তবে এ অভিযানের সময় মজুদকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তিনি আরও জানান, সরকার যখন ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশের নদনদীতে মা ইলিশ ধরা নিষেধ করেছে, তখন পদ্মা মেঘনায় এক শ্রেণির মৌসুমী জেলে এ সকল মা ইলিশ শিকার করছে। আমরা প্রায় প্রতিদিন নদীতে অভিযান চালিয়ে জেলেদের জেল জরিমানা করছি। তারপরেও এদের থামানাে যাচ্ছে না। তবে যেখান থেকে এসব ইলিশ উদ্ধার করা হয়েছে, এটা কোনো জেলের বাড়ি নয়। এরা এক শ্রেণির মৌসুমী ইলিশ ব্যবসায়ী। এরা অসৎ জেলেদের কাছ থেকে অল্প দামে ইলিশ কিনে ওই ঘরটিতে মজুদ করেছিল। আর মাত্র ২ দিন পর নিষেধাজ্ঞার সময় পার হলেই এসব ইলিশ এখান থেকে ঢাকা নিয়ে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করা হতাে। লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাে. হুমায়ুন কবির জানান, উদ্ধারকৃত মা ইলিশ লৌহজংয়ের প্রায় প্রতিটি এতিমখানায় ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। যেহেতু প্রচুর ইলিশ, তাই উপজেলার বাইরে জেলার অন্যান্য উপজেলার মাদ্রাসা ও এতিমখানায়ও জব্দকৃত ইলিশ বিতরণ করা হয়েছে।
এ অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মু. রাশেদুজ্জামান ছাড়াও অংশ নেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাে. ইলিয়াছ শিকদার, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাে. আসাদুজ্জামান আসাদ, সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মাে. ইদ্রিস তালুকদার, উপজেলা দারিদ্র্য বিমােচন কর্মকর্তা এমরান তালুকদারসহ সরকারি কর্মকর্তা ও থানা পুলিশ। #