মোঃমোজাম্মেল হোসাইন, রামগড় উপজেলা প্রতিনিধি,খাগড়াছড়ি: যৌতুক লোভী স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে রেহেনা নামের এক গৃহবধু। স্বামীর মধ্য যূগীয় নির্যাতনের শিকার হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন তার মামা।নির্যাতিতার পরিবার জানায়, খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার পূর্ব গচ্ছা বিল গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে আঃগফুরের (২৭) সাথে ৭ বছর আগে বিয়ে হয় ১নং রামগড় ইউনিয়নের মেয়ে রাহেনা আক্তারের। তাদের সংসারে ৬ বছরের ১টি মেয়ে সন্তান ও ৩ বছরের ১টি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর স্বামীর দাবি অনুযায়ী চার দফায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা যৌতুক দেন তার বাবা। কিন্তু গফুর আরও টাকার জন্য রাহেনাকে চাপ দিতে থাকে। দরিদ্র পিতার পক্ষে আর কোন টাকা দেয়া সম্ভব নয় জানালে সে ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন শুরু করে। সর্বশেষ গত ২১ সেপ্টেম্বর ভোর ৩টার দিকে গফুর রাহেনার ওপর নির্যাতন শুরু করে। কাঠের লাঠি দিয়ে লজ্জাস্থানসহ সমস্ত শরীরে আঘাত করে। অমানুষিক নির্যাতনের এক মূর্হুতে রাহেনা অচেতন হয়ে পড়ে। সকালে খবর পেয়ে তার মামা শাহাবুদ্দিন ও বাবা সাথে সাথে ছুটে যান মানিকছড়িতে।
সাহাব উদ্দিন অভিযোগ করেন, নির্যাতনে গুরুতর আহত অবস্থায় রাহেনা ছটফট করলেও কেউ তাকে হাসপাতালে বা কোন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়নি। এ অবস্থায় তারা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে রাহেনার শশুরবাড়ির লোকজন বাধা দেয়। পরে তাদের প্রতিবেশী সাবেক মহিলা মেম্বার শিউলি বেগম এর সহযোগিতায় গুরুতর আহত অবস্থায়
উদ্ধার করে রাহেনাকে মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
রাহেনার বাবা জানান, ঐদিন বিকাল পর্যন্ত স্বামী বা তাদের কেউই হাসপাতালে যায়নি। ফলে মানিকছড়ি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে রামগড়ে এনে স্থানিয়ভাবে চিকিৎসা করা হয় তাকে। আব্দুল গফুর পেশায় ট্রাক চালক। এরআগেও কয়েক বার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রাহেনা বাবার বাড়িতে চলে আসেন। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সালিসের মাধ্যমে স্বামীর বাড়ি ফিরে গেলেও তার ওপর নির্যাতন বন্ধ করেনি।
ফলে নির্যাতিতা রাহেনা গত ২৯/৯/২০১৯ তারিখে খাগড়াছড়িতে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/০৩) এর ১১(গ)/৩০ ধারায় স্বামীসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মানিকছড়ি থানায় যোগাযোগ করে জানা জায়, এ ব্যাপারে থানায় আদালত থেকে এখনও কোন নির্দেশনা আসেনি। আদালতের নির্দেশনা পেলে সেই অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।