মোহাম্মদ জাকির লস্কর, মুন্সীগঞ্জ: শ্রীনগরে হোগলাগাঁও হাজী রিয়াজুল ইসলাম দারুস”ংছুন্নাত দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবুল বাশার তালুকদারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভূয়া ছাত্র-ছাত্রীর নাম ঠিকানা অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে নিজের পছন্দমতো মাদ্রাসা কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি। ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ততা দেখিয়ে মাদ্রাসায় দিনের পর দিন অনুপস্থিত। ভূয়া বিল ভাউচার করে মাদ্রাসার অর্থ লোপাট। শিক্ষকদের এমপিওভূক্ত বেতন চালু করণের আশ্বাস দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই মাদ্রাসার সুপার আবুল বাশারের বিরুদ্ধে। মাদ্রাসাটিতে প্রায় ৩ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী ও মোট ১৩ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, সুপার আবুল বাশার ঢাকার কেরানীগঞ্জের আটি বাজার এলাকায় ভাঁড়া থাকেন। তিনি মাসের ১৫ দিনই নানান অজুহাতে ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন মাদ্রাসায় উপস্থিত থাকেন না। ফাতেমা নামে ২০১৪ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন মহিলা কাগজপত্রে ওই মাদ্রাসার শিক্ষিকা হিসেবে পাওয়া গেলেও রহস্যজনকভাবে মাদ্রাসায় তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু ফাতেমা নামে প্রতিমাসে বেতন উত্তোলন করা হচ্ছে। ২০০৩ সালে আবুল বাশারের কারসাজিতে ২৬৪ নং ভোটারে নবম শ্রেণীর ছাত্র আবু নাছের মিয়ার অভিভাবক দেখিয়ে শহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে অভিভাবক প্রতিনিধি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরের বার ২০৩ নং ভোটারের নামের তালিকায় একই কায়দায় শহিদুল ইসলামকে অন্তর্ভূক্তি করে পুনরায় তাকে অভিভাবক প্রতিনিধি হতে সহযোগিতা করার অভিয়োগ রয়েছে মাদ্রাসা সুপারের আবুল বাশারের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে গত ১১ নভেম্বর জেডিসি পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে মাদ্রাসার খরচ বাবদ ম্যাজিস্ট্রেট সম্মানি ১ হাজার টাকা, ১৮ নভেম্বর পুনরায় সম্মানি বাবদ ২ হাজার ৫০০ শত টাকা, গত ১৫ অক্টোবর ডেসিডি পরীক্ষার ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের বাসায় ফল-মিষ্টি পাঠানো বাবদ ৫ হাজার টাকা ভাউচার তৈরী করেন তিনি। এবছর চার জন বহিরাগত ছাত্রকে কাগজ কলমে হোগলাগাঁও মাদ্রাসার নিয়মিত ছাত্র দেখিয়ে দাখিল পরীক্ষার সুযোগ তৈরী করে দিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও মাদ্রাসার শিক্ষক মনিরুল ইসলামকে এমপিওভূক্তি করে বেতন চালু করার আশ্বাস দিয়ে ৬০ হাজার টাকা, মাদ্রাসায় চাকরী দেয়ার কথা বলে সাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। দীর্ঘদিন যাবৎ মাদ্রাসার কমিটি না থাকার করণে এসুযোগে আবুল বাশার অনিয়ম ও দূর্নীতিতে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার এসমস্ত দুর্নীতির বিষয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। মাদ্রাসার সহকারী সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, গত শনিবার সুপার আবুল বাশার সাহেবের কাছে মাদ্রাসার হিসাব নিকাশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা করেন তিনি। সুপারের হামলায় সহ-সুপার আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। দুর্নীতবাজ সুপার বাগাডম্বর করে বলেন ১৮ টা মামলা হয়েছে এতে আমার কিছু হয়নি। তোমরা কিছু করতে পারবেনা। এভাবেই ভূক্তভোগীদের হুমকি দিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ করেছেন সহ-সুপার নজরুল ইসলাম।
হোগলাগাঁও হাজী সিরাজুল ইসলাম দারুসচ্ছুন্নাত দাখিল মাদ্রাসা সুপার আবুল বাশারের কাছে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখন মাদ্রাসার কাজে ব্যস্ত আছি। অফিসের কাজগপত্র না দেখে কিছুই বলতে পারবো না।
শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাদ্রাসার দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলামের কাছে সুপারের অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তাই মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে এখনই এ বিষয়ে নির্দেশ দিচ্ছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।